দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ জোড়া এতিম যুবক-যুবতীর বিয়ে
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ২০ জোড়া দরিদ্র ও এতিম যুবক-যুবতীর যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিয়েতে নব দম্পতিদের নতুন পরিবার সাজাতে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় আসবাব ও সাংসারিক জিনিসপত্রও। যৌতুকের কু-প্রভাব এবং ধর্মীয়ভাবে যৌতুক দেয়া-নেয়ার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
শুক্রবার বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বটতলী ফয়জিয়া মদিনাতুল উলুম মাদরাসা মাঠ প্রাঙ্গণে এ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আগে থেকে সাজিয়ে রাখা মাঠে আনন্দ ঘন মুহূর্তে মানুষ আসেন যৌতুকবিহীন বিয়ে দেখার জন্য। বিকেলে ২০ জোড়া বর ও কনে সাজিয়ে আনা হয় অনুষ্ঠান স্থলে। এ সময় তাদের বিয়ে পড়ান মাওলানা আবেদ আলী। আগামীর দাম্পত্য জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনায় তাদের জন্য দোয়া কামনা করা হয়। পরে নব দম্পতিদের হাতে সেলাই মেশিন, ছাগল, লেপ-তোশক, রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, হাড়ি পাতিলসহ প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দেয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, এসব বর-কনে এতিম হতদরিদ্র। তাদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেয়ার সামর্থ্য নেই বললেই চলে। আর তাই বিয়ের এমন আয়োজন করা হয়। উদ্দেশ্য কনেকে যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দেয়া এবং একই সঙ্গে যৌতুকের ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে যৌতুকবিহীন বিয়েতে সাধারণ মানুষের মাঝে এ বার্তা পৌঁছে দেয়া।
বিয়ের এ সুন্দর আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল। এসময় তিনি ২০ জন কনেকে শাড়ি প্রদান করেন।
বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের তত্ত্বাবধানে বিয়েতে হাজার হাজার উৎসুক জনতার ঢল নামে। আর এ বিয়ের সব তদারকি করেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ দিনাজপুর প্রতিনিধি মাওলানা আইয়ুব আলী আনসারী।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ামিন হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম নুর ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আলম ফিরোজ, সাতোর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান বাবু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার বৃষ্টিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ জানান, এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যারা খরচের ভয়ে বৈবাহিক জীবন গঠন করতে পারেন না তাদের জন্যই যৌতুকবিহীন বিয়ের এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ ধরনের বিয়ের মাধ্যমে যৌতুকের যে কু-প্রভাব সেটি তুলে ধরা এবং যৌতুক দেয়া কিংবা নেয়া যে ধর্মীয়ভাবে নিষেধ সেটিও জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই এ বিয়ের লক্ষ্য।

Comments
Post a Comment
Thank you sir.